ইসলামের চোখে আলগা বা পরচুলা ব্যবহার

চুল সৌন্দর্যের প্রতীক। কেশহীন ব্যক্তিমাত্রই সবার অপছন্দ। স্বয়ং যার চুল কম হয় কিংবা টাক মাথা হয় সে নিজেকে অন্যের সামনে প্রদর্শণ করতে লজ্জা বোধ করে। নিজেকে দূর্ভাগা মনে করে। আর এমন সমস্যা নারীর হয়, তাহলে তো কথাই নেই। কেশ নারীর ভূষণ। কেশই বেশ।
এখন প্রশ্ন হলো, যাদের এমন সমস্যা রয়েছে,তার কৃত্রিম চুল ব্যবহার করতে পারবে কি-না, শরিয়তে এর বিধান কি। আজ আমরা এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব।
মানুষ কিংবা শুকরের চুল পরচুলা হিসেবে ব্যবহার জায়েয নেই
মহিলাদের জন্য কোনো মানুষের চুল পরচুলা হিসাবে ব্যবহার করা ইসলামি শরিয়তে নাজায়েয। হাদীস শরীফে এ ব্যাপারে কঠিন ধমকি এসেছে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
لَعَنَ اللَّهُ الوَاصِلَةَ وَالمُسْتَوْصِلَةَ.
আল্লাহ তাআলা লা‘নত করেন ঐ নারীর প্রতি যে (অন্য নারীকে) চুল লাগিয়ে দেয় এবং যে নারী নিজে চুল লাগায়। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৯৩৩)
পশুর চুল কিংবা কৃত্রিম চুল পরচুলা হিসেবে ব্যবহার জায়েয
পরচুলা যদি কোনো মানুষের চুল না হয়ে শুকর ব্যতীত কোনো পশুর হয় অথবা কৃত্রিম চুল হয় তাহলে তা ব্যবহার করা অবৈধ নয়।
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন,
لاَ بَأْسَ بِالْوِصَالِ إِذَا كَانَ صُوفًا.
পশম দিয়ে তৈরি পরচুলা ব্যবহার করতে সমস্যা নেই।
মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ২৫৭৪৩)
সুনানে আবু দাউদের বর্ণনায় এসেছে সাঈদ ইবনে যুবায়ের রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- لَا بَأْسَ بِالْقَرَامِلِ
‘করমাল’ ব্যবহারে কোনো সমস্যা নেই। (হাদীস ৪১৬৮)
‘করমাল’ আরবী শব্দ। অর্থ হল রেশম বা পশমের সুতা দিয়ে তৈরি কেশগুচ্ছ যা মহিলারা চুলের সাথে যুক্ত করে ব্যবহার করে।
সুতরাং কেনো ধরনের নকল চুল ব্যবহার করা জায়েয নেই- এ কথা ব্যাপকভাবে বলা ঠিক নয়।
প্রকাশ থাকে যে, কৃত্রিম চুল লাগালে তখনই জায়েয হবে যখন তা শুধুই সৌন্দর্যচর্চা পর্যন্ত সীমিত থাকবে। কিন্তু এ ধরনের চুল ব্যবহার করার দ্বারা যদি প্রতারণা উদ্দেশ্য থাকে তাহলে তা নাজায়েয হবে।
রাদ্দুল মুহতার ৬/৩৭২; বাযলুল মাজহুদ ১৭/৫৮